নিজস্ব সংবাদদাতা:
১২ বছর বয়সী সালমান। এলাকার বাজার মসজিদে যাওয়ার সময় সম-বয়স্ক মুরাদের সাথে কথা কাটাকাটি, এক পর্যায়ে ঝগড়া হয়। ওই ঘটনার উপর ভিত্তি করে কীৰ্ত্তনখোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম
সালমানকে তার দোকানের কাছে নিয়ে প্রথমে থাপ্পর মারে, পরে লাঠি (চলা) দ্বারা তিন বার আঘাত করে। পরে সালমানের চাচা সাজিদুল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে সভাপতি সাদেকুল ইসলামের হাত থেকে সালমানকে ছাড়াতে ব্যর্থ হলে বাড়িতে এসে উক্ত ঘটনা খুলে বলে।
পরে সালমানের পিতা শরীফুল ও চাচা সাজিদুল ঘটনাস্থলে যায় এবং সালমানকে মারধরের কারন জানতে চাইলে কীৰ্ত্তণখোলা বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এছাড়া সাদেকুল তার স্ত্রীকে নির্দেশ দেয় ঘর থেকে লাঠি, দা নিয়ে আসতে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে এক প্রকারের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
আর এমন অমানবিক ও স্বেচ্ছাচারিতাপূর্ণ অভিযোগ ওঠেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কীর্ত্তণ খোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সালমানের চাচা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন এহেন কর্মকাণ্ডে বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি সহযোগিতা করছে।
এদিকে ঘটনার পর পরই সাদেকুল থানায় গিয়ে অভিযোগ করে। ঘটনা বর্তমান মেম্বার, মহিলা মেম্বার ও চেয়ারম্যান সাহেবকে জানানো হলে চেয়ারম্যান থানায় কথা বলে, বিষয়টি সুষ্ঠু মিমাংসার জন্য গ্রামেই শালিশের আয়োজন করে।
সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন- সাদেকুল ইসলাম শালিশে থাকবে বলে স্বীকার করে কিন্তু পরে সুকৌশলে বনিক সমিতির সভাপতি থাকায় অন্যায়ভাবে কীৰ্ত্তন খোলা বাজারের সকল দোকানদার কে বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান (মতি) ও সভাপতি সাদেকুল এই নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পরিবারের কারো কাছে কোন ধরনের পণ্য বিক্রি না করে। গত ২৪ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার সাহেব ও ৯
নং ওয়ার্ডের মেম্বার নঈম উদ্দিন ও ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার উক্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কয়েক বার অনুরোধ করলেও সাদেকুল ইসলাম ও মতিয়ার কর্ণপাত না করে বলে বাজার কারো বাপের না, আমাদের বাজার।
সাইফুল ইসলাম আরো বলেন-গত ৩১ মার্চ সন্ধায় রুবি স্টোরে আমি পণ্য ক্রয় করতে গেলে আমাকে বলে, তোমার নিকট পণ্য বিক্রির নিষেধ আছে। এ সময় দোকানের ভেতর বসা ছিলেন কালিহাতী উপজেলার এ.টি.ও মীর সাইফুল ইসলাম। তিনি বণিকের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ারের নির্দেশের নিন্দা জানায় এবং আমাকে বলেন এটা অন্যায় নির্দেশ, মানবতা বিরোধী।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, চেয়ারম্যান এর পূর্ব ঘোষিত শালিশের তারিখ ২৮/০৩/২০২৩ইং রোজ: মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে আনুমানিক দুপুর ১২ টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও মেম্বার সহ গ্রামের গণ্য মান্য মাতাব্বরগণ উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সাদেকুল ও মতিয়ার সহ তাদের পক্ষের কোনো লোক শালিশে উপস্থিত না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যান সাহেব মুঠো ফোনে উক্ত ঘটনাটি থানায় অবহিত করেন।
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা
তিন ভাই শ্রমজীবি মানুষ। দিন এনে দিন খাই, প্রতিদিন আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারের দরকার, আমার পিতা একজন মসজিদের ইমাম, তিনি অতি কষ্টে রমজানের বাজার সংগ্রহ করে জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
এসময় ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচারের জন্য সকলের সদয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি সত্য এবং দুঃখজনক। দেশের ডিজিটাল সময়ে এরকম বর্বরতা মানা যায় না। আমি এবং আমার মেম্বাররা বিষয়টি মীমাংসার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু আসার কথা বলে আমরা ২-৩ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও কীৰ্ত্তনখোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা আসে নাই।
এ বিষয়ে বণিক সমিতির সভাপতি সাদেকুল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
Leave a Reply